মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রাণী। ন্যায়-অন্যায়, ভালোমন্দ, যুক্তি-বুদ্ধি মানব চরিত্রের গুণাবলী। মানুষকে সংস্কৃতিবান বলা যায়। কতগুলো গুণাবলী মানুষকে মানুষ হতে সাহায্য করে। এসব গুণাবলী ছাড়া জন্মগত ভাবে প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না, এসব কিছু চর্চা করে অর্জন করতে হয়। প্রশ্ন হলো কেমন এবং কোন কোন গুণবলী মানুষকে সু-সংস্কৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে । আমরা আজকের আলোচনায় মানুষের সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। গড় পড়তা মানুষ থেকে কতটুকু আলাদা হলে এবং কোন সব গুনবলীর অধিকারী হলে তাকে সংস্কৃতিবান বলা যায়। যেসব মানুষের দ্বারা সমাজের বেশীরভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়-না বরং উপকৃত হয় সেই মানুষকে কি আমরা সু-সংস্কৃত মানুষ বলতে পারি কিনা? সংস্কৃতির সৌন্দর্য যে মানুষকে সবার থেকে আলাদা করে, সেই মানুষকেই আমরা সংস্কৃতিবান বলব কি?
সংস্কৃতি কী?
সংস্কৃতি হলো বিশ্বাস। বোধ, রুচি, দৃষ্টি এবং এসব কিছুর সমন্বয়ে ও পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশভঙ্গি। সহজ কথায় সংস্কৃতি হচ্ছে সামগ্রিক জীবনের আচরণ ও প্রকাশ করার পদ্ধতি। একজন মানুষ তার জীবনের সবকিছু মিলে যা তাই হলো তার সংস্কৃতি। একজন মানুষ যেভাবে কথা বলে, যেভাবে আচরণ করে ও যেভাবে চলাফেরা করে তাই সংস্কৃতি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- একজন মানুষ কি পোশাক পরেন, কী খান, কিভাবে বলেন এবং কীভাবে চলেন, ঘুম থেকে জেগে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত কী করেন ও কিভাবে করেন? সকল বিষয়ের সাথে জড়িয়ে আছে তার সংস্কৃতি। মানুষের এসব বিষয় বিচার করা ও বোঝা খুব জরুরী। এবার আমরা একজন সংস্কৃতিবান মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্যের সাথে পরিচিত হবো।
ক) দায়িত্বের প্রতি যতœবান
একজন সংস্কৃতিবান মানুষ সবসময় তার দায়িত্বের প্রতি যতœবান। সাধারণত বিবেচনা করে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আর একবার দায়িত্ব গ্রহণ করলে সচেতনভাবে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেন। এরা নিজ দায়িত্ব এড়িয়ে চলেন না বা অনীহা প্রকাশ করেন না। যথার্থ ও উত্তম পন্থায় দায়িত্ব পালন করেন সময়মতো। উপযাচক হয়ে দায়িত্ব পেতে চেষ্টা করেন না। পদ বা চেয়ারের প্রতি লোভী নন। চেয়ার বা পদ তাকে বিশিষ্ট করে না, তিনিই পদকে মর্যাদাবান করে তোলেন।
খ) অন্য মানুষকে সম্মান করেন
তিনি নিজের সম্মানের প্রতি যেমন যতœবান অন্যের সম্মানকেও তেমনি শ্রদ্ধা করেন ও রক্ষা করেন। অন্যদের সাথে মত বিনিময় করেন সম্মানের সাথে। অন্যকে সম্মান করতে কোনো কার্পন্য করেন না। নিজে যেমন সফল হতে চেষ্টা করেন, অন্য মানুষের সাফল্যেও সহযোগিতা করেন। প্রত্যেক মানুষের যথাযথ মর্যাদার স্বীকৃতি দেন। বয়সে বড় বা ছোট সবার প্রতি সম্মান বজায় রেখে চলেন। নিজেকে অপমান থেকে সরিয়ে রাখেন। সকলের সম্মানের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল থাকেন।
গ) প্রতিশোধ গ্রহণে বিরত থাকেন
সংস্কৃতিবান মানুষ কখনো প্রতিশোধ পরায়ন হন না। প্রতিশোধ ভাবনা থেকেই বিরত থাকেন। ক্ষমার পথ বেছে নেন। সম্ভব না হলে বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলেন। ক্ষমা খুবই ভালো গুন, ক্ষমা করার মধ্যে আনন্দ থাকে। প্রতিশোধ প্রবণতা কিভাবে মানব সমাজের ক্ষতি ও ধ্বংস করে তা তিনি ভালোভাবে জানেন। প্রতিশোধ গ্রহণের আগুন মানুষকে ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার করতে পারে না বলে একজন সংস্কৃতিবান মানুষ এই বিষয়টি নিয়ে সব সময় সতর্ক থাকেন। পরোপকারী হয়ে থাকেন।
ঘ) নিরহঙ্কারী থাকেন
একজন সংস্কৃতিবান মানুষ নিরহঙ্কারী হয়ে থাকেন। উন্নত রুচি থাকে তার। অহঙ্কার মানেই কদর্যতা, রুচিহীনতা। তার রুচিশীলতাই তাকে অহঙ্কার থেকে দূরে রাখে। সংস্কৃতিবান মানুষকে অন্য মানুষ তাদের ভরসাস্থল মনে করে। তিনি চমৎকার মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ।
অহঙ্কারমুক্ত থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এটা খুব কঠিন কাজ। সংস্কৃতিবান মানুষের সাথে অহঙ্কারের নীতিগত বিরোধ থাকে। রুচিশীল সংস্কৃতিবান মানুষের সাথে অহঙ্কার, ঔদ্যত্ত, বেপরোয়া ভাব কোনক্রমেই যায় না। অসত্যকে আকড়ে ধরে কখনো নিজেকে সঠিক প্রমাণে চেষ্টা করবেন না। অসত্য অসুন্দর আর অসুন্দর সংস্কৃতির শত্রু।
ঙ) উত্তম ও আকর্ষনীয় ব্যবহার
সংস্কৃতিবান মানুষের অনন্য সৌন্দর্য হলো উত্তম ব্যবহার। এটি তার তুলনাহীন গুন। যিনি ব্যবহারে উত্তম তিনি মানুষ হিসেবেও সেরা। সেরা বা উত্তম মানুষ ছাড়া ভালো ব্যবহার করা সম্ভব না। সংস্কৃতিবান মানুষ ছাড়া উত্তম ব্যবহার করার আশা ঠিক নয়। সংস্কৃতি মানুষকে সর্বোত্তম হতে শিক্ষা দেয়। একজন ভালো মানুষ অন্যের সাথে ভালো ব্যবহারতো করেনই, নিজের সাথেও সব সময় ভালো বা উত্তম থাকার চেষ্টা করেন। নিজের সাথে যিনি উত্তম ব্যবহার করতে শেখেন না অন্যের সাথেও তিনি কোনোক্রমেই ভালো আচরণ করবেন না।
একটি বিষয় আমাদের চিন্তায় পরিষ্কার হওয়া খুব জরুরি, মানুষ যখন একা থাকেন। তখন তিনি নিজের সাথে কিভাবে আচরণ করেন, কিভাবে দায়িত্ব পালন করেন, কিভাবে খান, কিভাবে ঘুমান এর সবই মানুষের উত্তম ব্যবহারের সাথে যুক্ত। কোন মানুষ যদি অন্যকে দেখানোর জন্য সভ্যতা, ভদ্রতা, নম্রতা ও সুবেশ ধারণ করেন তাহলে তিনি কখনই উত্তম মানুষ নন। উত্তম ব্যবহার মানুষের জীবনের সব থেকে বড় পুঁজি। উত্তম ব্যবহারের থেকে মানুষের জীবনে উত্তম আর কিছুই নাই। তাই আমরা বলতে পারি অন্য লোক অধম হলেও আমি উত্তম হবো না কেন?
চ) হাসি মুখে মিষ্টি ভাষা
ভাষার শুদ্ধতা ও মিষ্টতা একজন সংস্কৃতিবান মানুষের অন্যতম গুন। সদা হাস্য মুখে সচেতনভাবে মনের ভাব প্রকাশ করেন। সুমিষ্ট কথোপকথন তার স্বাভাবজাত। কাজে-কর্মে, চলা ফেরায়, স্বভাবতই তিনি কোমল মনের ও সাদালাপি হয়ে থাকেন। বেশি কথা বলেন না আবার প্রয়োজনে চুপ করে থাকেন না। প্রতিটি কাজের সাথে হৃদয়গ্রাহী ভাষা ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক। স্বত:স্ফুর্ত ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করবেন কাউকে আঘাত না করে। সরলভাবে কোমল ভঙ্গিতে প্রয়োজনে কঠিন কথা বলেন। অপ্রয়োজনীয় কোনো আলোচনায় শরীক হন না, নিজে মানিয়ে গুছিয়ে চলেন। মানুষ তার কাছে আসতে আগ্রহী থাকে, সঙ্গ কামনা করে, সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকে। ছোট বড় বয়স ভেদে সম্মান দেখিয়েও নিজের সম্মান বজায় রেখে চলেন। ন্যায়- অন্যায়ের ভেদাভেদ বুঝে পরিবেশ ঠিক রাখার চেষ্টা করেন। সবদিক গুছিয়ে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পথ চলেন। কর্মস্থলে সহকর্মীর সাথে সর্বদাই শোভন ব্যবহার সহজ সরলভাবে কাজ করে থাকেন। নিজের পরিবারকে যেমন গুছিয়ে রাখেন, তার সমাজকেও গুছিয়ে সুন্দর রাখতে সচেষ্ট থাকেন। নিজ দেশের প্রতি যেমন দায়িত্ববান থাকেন তেমন নিজের কাজের সৌন্দর্যও বজায় রেখে চলেন। সভ্যতাকে সমুন্নত রাখার ব্যাপারে সদাসর্বদা সচেতনে পথ চলেন।
সংস্কৃতিবান মানুষের ভাষার হৃদয়গ্রহিতা সকলকে আকর্ষন করে। সুমিষ্ট ভাষা, সুশোভন আচরণ, সুসমন্বিত ব্যবহার, ন্যায়নিষ্ঠ সংলাপ, সৌকর্যমন্ডিত ক্রিয়াকলাপ মানুষকে সব সময়ই তার কাছে টানে।
প্রাণ খোলা, নম্রতা ও কোমলতাই বৈশিষ্ট্য
প্রাণখোলা, কোমল হৃদয়ের, নম্র স্বভাব একজন সংস্কৃতিবান মানুষের প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোমলতর সৌন্দর্য ঘেরা, নম্রতার অলঙ্কারে শোভিত, উদার হৃদয়ের একজন মানুষই প্রকৃত সংস্কৃতিবান মানুষ। ভেতরে-বাহিরে ছোট-বড় সকলের সাথে খোলা মনে মেলা-মেশা করেন। সকল মানুষকে কোমল হৃদয় স্পর্শে, নম্র স্বভাবে কাছে টানতে পারেন অকাতরে। ধনী-গরীব, বড়-ছোট, সকলের সাথে সমানভাবে আচরন করেন। পৃথিবীর প্রান্তরে গতকালের শিক্ষা থেকে আগামীতে পথ চলেন। জীবন মানে পথচলা তাই তিনি আপন মাধুর্য্যে সু-শোভন, বিনম্র, সুকোমল ভঙ্গিমায় চলতে থাকেন। আত্মগত নম্রতা, আকাশের মতো উদারতা পৃথিবীর পথে চলতে সাহস যোগায়। তিনি আশাবাদী মানুষ, সকলের সমান অধিকারে বিশ্বাসী। মানুষকে আপন করে নেয়ার আনন্দে বিভোর এবং সাম্যবোধে বিশ্বাসী, ন্যায়-নিষ্ঠতার ব্যাপারে কঠোর একজন সচেতন মানুষ। নিজের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন এবং অন্যের অধিকারের বিষয়ে ততোধিক যতœবান একজন ন্যায়-নিষ্ঠ মানুষ। কোমলতা এমনই এক অলঙ্কার যা সকল মানুষ থেকে তাকে স্বভাবতই ভিন্নতা এনে দেয়। আর নম্রতা হচ্ছে সেই বাহন যা মানুষকে প্রতিনিয়তই আকর্ষনীয় করে তোলে। জীবনের সকল সুন্দরকে একই মালায় গ্রথিত করে নম্রতা। সকলকে সৎকাজে সাথে নিয়ে পথ চলতে তিনি যেমন আনন্দ পান, তেমনি কমনীয় ভঙ্গিমায় নমনীয় প্রকাশ করা তার সেরা বৈশিষ্ট্য।
ভদ্রতার সাথে পরিশীলিত চলা
ভদ্রতা বুঝতে আমাদের সংস্কৃতিবান মানুষের কথা বলতেই হয়। ভদ্রতা কি? একজন মানুষ তার কথায়, কাজে, পথচলায়, মত-বিনিময় করতে সর্বদাই কমনীয় এটাই ভদ্রতা। কখন একজন মানুষ আপাদমস্তক পরিশীলিত ও ভদ্র সেটাই আমাদের বিচারের বিষয়। যিনি আজ ও আগামীকালের কথা মনে রেখে, গতকালকে অভিজ্ঞতা হিসেবে হৃদয়ে ধারন করেন, তিনিই সংস্কৃতিবান, তিনিই ভদ্র, তিনিই পরিশীলিত মানুষ। ভদ্র মানুষ কখনো সীমা অতিক্রম করেন না, অন্যের মনোকষ্টের কারণ হন না। চলার পথে, বলার সময়, করার মূহুর্তে সকল দিক বিবেচনায় রাখেন। ন্যায়-নিষ্ঠভাবে, সময়োপযোগী সুবিবেচনা প্রসূত পথে উদার দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো কাজ করেন। সব সময় নিজেকে ভদ্র ও পরিশীলিত পথে প্রকাশ করেন। পরশ্রীকাতরতা, লোভ, অন্যায়ভাবে পাবার ইচ্ছে, কখনই একজন ভদ্র ও পরিশীলিত মানুষকে উৎসাহিত করে না। সু-শোভন কথা, মার্জিত আচরণ, ন্যায়সঙ্গত স্বার্থচিন্তা এবং সহজ সরল ক্রিয়া-কলাপই একজন মানুষকে পরিশীলিত করে। আর একজন ভদ্র মানুষ তাই করেন যা বেশিরভাগ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে। মার্জিত কথা ও কাজের দ্বারা একজন মানুষ সবার কাছে নিজেকে তুলে ধরেন বলেই আমরা তাকে ভদ্র বলি। অভদ্রতা, অমার্জিত কাজ কর্ম তিনি করেন না। তাই উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে একথা স্বীকার্য যে, ভদ্রতাই উন্নত মানুষের এবং পরিশীলিত আচরণের সোপান।
বিদ্বেষমুক্ত, পরশ্রীকাতরাহীন ও সংকীর্নতা মুক্ত
যে মানুষ সংস্কৃতিবান, তিনি মুক্ত হাওয়ায়, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে চেষ্টা করেন। খোলা মনে ঔদার্য্যের সাথে উদারতা দেখিয়ে পথ চলেন ও মুখে বলেন। খোলা আকাশের মতো তার মন, সমুদ্রের মতো তার গতি এবং সবার জন্য উন্মুক্ত পৃথিবীর কথা ভাবেন।
সমালোচনা তার মধ্যে কখনো বাসা বাঁধে না। অন্যের প্রতি হিংসা-পরায়ন হয়ে পরশ্রীকাতর হন না, কোনো সংকীর্নতা তার মধ্যে বাসা বাধে না। বিদ্বেষপরায়ন হয়ে কারো সামান্য ক্ষতির চেষ্টা তিনি কখনো করেন না। সকলের স্বাধীনতা বজায় রেখে, অন্যের উন্নতিতে খুশী হন। সরল ও উদার মনে অন্যকে ভালো কাজে উৎসাহিত এবং খারাপ কাজে বাধা দিয়ে থাকেন। উন্নত চিন্তা, ভালো কাজ, ন্যায়সঙ্গত আচরণ নিজে করেন এবং অন্যদের সাথে নিয়ে প্ররশ্রীকাতরতা, বিদ্ধেষহীনতা ও সঙ্কীর্ণতা থেকে দূরে থাকেন। সবসময় নিজের ভালোর সাথে অন্যদের ভালো থাকার, রাখার ও ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত করেন।
বিদ্বেষ সমাজের শান্তি বিনষ্ট করে, পরশ্রীকাতরতা মানুষের ক্ষতির কারণ হয়। আর এসব কিছু সংকীর্ণ মানসিকতারই ফসল। তাই সংস্কৃতিবান মানুষ সব সময় এসব আচরণ থেকে দূরে থাকেন।
প্রিয় ভাষী ও হাসিখুশি মন
সদাহাস্য মুখ সবাই পছন্দ করেন। একজন মানুষের মুখে যদি মৃদু হাসি থাকে সেটা দেখে অন্য মানুষের ভালো লাগে। যার মন সুন্দর, কাজ সুন্দর, চলা সুন্দর জীবন যাপন আনন্দময়, সর্বোপরি সুন্দরভাবে কথা বলেন, তাকে সবারই ভালো লাগে। যিনি প্রনবন্ত প্রেরনাসর্বশ্ব, প্রানোচ্ছল, ছোটখাট দুঃখকে পাশে ঠেলে পথ চলেন, তিনিইতো মানুষকে উদ্বীপ্ত করতে পারেন। হাসি মুখে, দুঃখকে তিনি জয় করার সাহস রাখেন তিনিই প্রকৃত সু-সংস্কৃত মানুষ। দুঃখকে আনন্দে রূপ দিতে পারার মধ্যে যে সাহস ও উদার মনের প্রয়োজন হয় তাই-তো সঞ্জীবনী সুধা। মানুষের মুখের হাসি, ফুলের থেকেও সুন্দর হয় যদি সে হাসি, আনন্দ অন্যের মধ্যে সঞ্চারিত করা যায়। অন্য মানুষের মনের দুঃখকষ্টকে ভুলিয়ে হাসি ফোঁটাতে পারলে তার থেকে আর মহৎ কিছু হয় না। একজন সংস্কৃতিবান মানুষের নিজের আনন্দ ও সৌন্দর্য্য তার পরিবার-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি তার সমাজকেও প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করে। নিজের সৎ গুনাবলীর দ্বারা তিনি উন্নত সভ্যতার দিকে সমাজকে নিয়ে যেতে পারেন। একজন মানুষের কথা দ্বারা যতো মঙ্গল সাধন করা যায় অন্য কোনো যাদুমন্ত্র পৃথিবীতে নাই যা, মানুষের জীবনকে ততোটা সুখ-শান্তি, উন্নতি ও পরিপূর্ণতা এনে দিতে পারে। তাই সংস্কৃতিবান মানুষই প্রিয়-ভাষী, হাসি খুশি ও মঙ্গলময় মানুষ।
লেখক : সমন্বয়কারী, বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্র, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি