২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় আবারও পরিবর্তনে আনছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি পরীক্ষার কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসব নিয়মাবলী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা পুনর্গঠিত ৪টি ইউনিটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার পুনর্গঠিত ৪ টি ইউনিট হলো: ১. কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট, ২. বিজ্ঞান ইউনিট, ৩. ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট এবং ৪. চারুকলা ইউনিট।
অপরদিকে ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিজ্ঞান ও বিজনেস স্টাডিজ ইউনিটের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা বিভাগ/ইউনিট পরিবর্তনের জন্য ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
এছাড়া মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বা বাণিজ্য বিষয়ে ভর্তির জন্য ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সাথেই গণিত/পরিসংখ্যান অথবা অর্থনীতি/হিসাব বিজ্ঞান অথবা পূর্বশর্তযুক্ত যে কোনো বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে।
একই সাথে, সভায় সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মতো ভবিষ্যতে একটি মাত্র স্ট্যান্ডার্ডাইজড টেস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে ভাবার জন্য ডিনদের পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সভায় এ সব সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী ৩টি ইউনিটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর বণ্টন :
মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার কেউ যদি বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়ে ভর্তি হতে চায় তাকে ক ইউনিটেই আবেদন করতে হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে বাংলায় ২৫ নম্বর (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ১০), ইংরেজি (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ১০), আইসিটি (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ১০) এবং গণিত, পরিসংখ্যান, মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ভূগোল-এর যেকোনো একটি বিষয়ের উত্তর করতে হবে। যেখানে নম্বর থাকবে ২৫ (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ১০)।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা গ ইউনিটে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ থেকে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের বাংলা ২২ নম্বর, যার মধ্যে এমসিকিউ ১২ ও লিখিত ১০, (বিদেশীদের ক্ষেত্রে অ্যাডভান্সড ইংলিশ); ইংরেজিতে ২২ নম্বর (এমসিকিউ ১২ ও লিখিত ১০), আইসিটি ২২ নম্বর (এমসিকিউ ১২ ও লিখিত ১০), গণিত বা পরিসংখ্যান বা অর্থনীতি থেকে যেকোনো একটি বিষয়ের উত্তর দিতে হবে যার নম্বর থাকবে ৩৪ (এমসিকিউ ২৪ ও লিখিত ১০)।
অন্যদিকে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীসহ সবার জন্য একই ধরনের প্রশ্নপত্র থাকবে। বাংলায় ৩৫, (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ২০), ইংরেজিতে ৩৫ (এমসিকিউ ১৫, লিখিত ২০) এবং ৩০ নম্বরের সাধারণ জ্ঞান। বিদেশীরা বাংলার পরিবর্তে অ্যাডভান্সড ইংলিশের উত্তর করবে।
ভর্তি পরীক্ষার নতুন নামকরণ ‘আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম’ : আগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাটি স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত ছিল। সভায় উপস্থিত একজন অধ্যাপক বলেন, এখন থেকে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষাটিকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। যখন তার চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে তাকে গ্র্যাজুয়েট বলা হবে। একইভাবে পরবর্তী ধাপ পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট (মাস্টার্স, এমফিল) হিসেবে চিহ্নিত হবে।
নতুন কোটা ট্রানজেন্ডার/হিজড়া : বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন, পূর্বে থাকা কোটাগুলোর সাথে ট্রানজেন্ডার কিংবা হিজড়া সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি কার্যকর করা হবে তাদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে।
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ : কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা ৬ মে (শনিবার), বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা ১২ মে, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের পরীক্ষা ১৩ মে অনুষ্ঠিত হবে। চারুকলা ইউনিটের পরীক্ষা ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। সকল পরীক্ষা সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয়ে সাড়ে বারোটায় শেষ হবে। শিক্ষার্থীরা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা ও ফি জমা দিতে পারবে।