কোভিডের কারণে শহরের স্কুলগুলোতে অনলাইন ক্লাস হলেও গ্রামের স্কুলে তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। অনলাইন ক্লাস নেওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় এবং অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনলাইন ক্লাসের উপযুক্ত ডিভাইস না থাকার কারণে এরূপ ব্যবস্থা সম্ভব হয়নি। দিনের পর দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা চরম বিপর্যয় পড়েছে । পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো পর্যন্ত ২০২০ সালে এইচএসসি যারা পাশ করেছে, তাদের ভর্তির ঘোষণা না দেওয়ায় এই ছেলে মেয়েরা প্রায় পুরো একটি বছর ধরে কোনরকম লেখাপড়া ছাড়া আছে। এদের মধ্যে কাজ করছে চরম হতাশা। যাদের সামর্থ্য আছে তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ক্লাস করছে।
কিন্তু যে সকল পরিবারের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়ানোর মতো সামর্থ্য নেই, সেই শিক্ষার্থীরা আরো বেশি হতাশায় ভুগছে । কারণ তাদের সমবয়সী যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারছে, তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলে স্কুল-কলেজের ক্লাস বন্ধ থাকার এই সুযোগে চলছে বাল্যবিবাহ। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘদিনের যে অর্জন, বিশেষ করে নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের যে অগ্রগতি বিগত বছরগুলোতে হয়েছে সেটি ধরে রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর অনেক অভিভাবককে দেখছি বাজার ঘাটে পর্যন্ত বাচ্চাদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন, রেস্টুরেন্টে যাচ্ছেন খেতে যাচ্ছেন। কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলেই করোনা ছড়াবে ব্যাপারটি কি তাই? প্রতি ক্লাস এর শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে অন্তত দুদিন করে যেন ক্লাস করতে পারে, সে রূপ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার মনে করছি। সবাই প্লিজ মাস্ক পরা অব্যাহত রাখুন, হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখুন।
ড. নাজনীন আহমেদ ফেসবুক থেকে নেওয়া।