জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘পৃথিবীতে শুদ্ধাচারের শ্রেষ্ঠ জায়গা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে শুদ্ধাচারের পথপ্রদর্শন করা হয়। শিক্ষক নিজে ক্লাশে যা পড়াবেন সেটিই হবে ওই সমাজের শুদ্ধাচারের প্রতীক। শিক্ষক যা করবেন সেটি হবে সমাজে শুদ্ধাচারের বাস্তব উদাহরণ।
বুধবার রাতে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অংশীজনদেরকে নিয়ে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
উপাচার্য বলেন, ‘ইনটিগ্রিটির প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আমাদের মাধ্যমেই অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শিখবে। এটাই সমাজের একটা সেট নরমস। সুতরাং এটার দায়বদ্ধতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের ওপর বেশি পরে। প্রতিষ্ঠানের ভেতরের যে শুদ্ধাচার সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষকরা পাঠদান এবং গবেষণায় বেশি নিবিষ্ট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের মনে রাখা উচিত শিক্ষক যে সম্মান পায় সেটা তো সমাজের অন্য পেশার মানুষ পায় না। শিক্ষক অন্যের কাছে বিশেষ করে শিক্ষার্থীর কাছে যেরকম মডেল, সেরকম তো সমাজে আর নেই। তাহলে আমাদের শূন্যতা কোথায়? দরিদ্রতা কোথায়? এপিএ, ইনটিগ্রিটি, সিটিজেন চার্টার যাই বলি না কেন, একজন শিক্ষকের ক্লাসরুম তাঁর পবিত্র প্রাঙ্গণ। আমাদের অভাব, অভিযোগ, প্রতিবন্ধকতা, না পাওয়ার বেদনাবোধ অনেক আছে। কিন্তু আমাদের তথা শিক্ষকদের যা আছে সেটি অনেক পেশার মানুষের নেই। বেতনের মাপকাঠিতে যদি বলেন তাহলে আমরা হয়তো পিছিয়ে আছি। কিন্তু মর্যাদার মাপকাঠিতে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়- শিক্ষকরা সমাজে অনেক বেশি পূজনীয়। এটি সমাজ এখনো ধারণ করে।
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আপনারা যার যার জায়গায় নেতৃত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে পারলে কোভিডের ক্রান্তিকালের যে চ্যালেঞ্জ সেটিকে জয় করে আগামীর সমাজ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে। দেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ তরুণকে আমরা ধারণ করি। তাদেরকে যদি আমরা তৈরি করে দিতে পারি, শুদ্ধাচার শিক্ষা দিতে পারি তাহলে আগামীর বাংলাদেশ মেরুদণ্ড সোজা করে উন্নয়নের গতিধারায় প্রবাহিত হবে। সেই উন্নয়ন শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, সেই উন্নয়ন সাংস্কৃতিক জাগরণ। বাংলাদেশকে তারা দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গভীরভাবে ভালোবাসবে
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জয়ন্ত ভট্টাচার্যের পরিচলনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে সংযুক্ত ছিলেন স্নাতকোত্তর শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল- হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান, বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানগণ ও বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ। উল্লেখ্য, ২৯ জুন সিটিজেন চার্টার বিষয়ে সভা এবং ২৮ জুন নৈতিকতা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।