জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কর্মচারী ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে গত ২০ আগস্ট ইউজিসি অডিটোরিয়ামে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শের’ ওপর আলোচনা সভার মুখ্য আলোচক প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম বলেন, দেশের অগ্রগতির যাত্রা রোধ করতে অতীতের মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দেশের চলমান উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে জনসাধারণকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম দস্তগীর।
অনুষ্ঠানে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ধ্বংসস্তুপ থেকে দেশকে উন্নয়নের ধরায় ধাবিত করেন। কিন্তু পরাজিত শক্তির অব্যাহত ষড়যন্ত্রের ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। সেই ধরনের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। দেশের জনগণকে তাই সকল অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। তা না হলে আবারও মুখ থুবড়ে পড়বে বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিলো। সেই আক্রোশে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এই হত্যায় সবচেয়ে লাভবান হয়েছেন জিয়াউর রহমান, শাহ আজিজ ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ ও বঙ্গবন্ধুর খুনিরা।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর আলমগীর বলেন, বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা, আর এটি এনে দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির দুর্ভাগ্য স্বল্প সময়ে তাকে হারাতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা যারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে, তাদের রায় দ্রুত কার্যকর করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন ও দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান তিনি। শিক্ষার মানোন্নয়নের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন করতে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে। তাহলেই কেবল বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে বলে তিনি জানান।
কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে দেশের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। দেশের চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পরাজিত শক্তি এখনো তৎপর আছে। সকল বাধা ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে অদম্য বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার উদ্দেশ্য ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা নয়, বরং তাঁর আদর্শকে হত্যা করাই ছিলো খুনীদের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু খুনীদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন হাজারো বাঙ্গালির হৃদয়ে। তিনি এ আদর্শকে ধারণ করে সত্যিকার সোনার বাংলা গঠনে সকলকে কাজ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, গবেষণা সহায়তা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলাম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান, পরিকল্পনা ও উন্নয়নের বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, জেনারেল সার্ভিসেস এস্টেট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক জাফর আহম্মদ জাহাঙ্গীর, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগের পরিচালক দুর্গা রানী সরকার, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদারসহ ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।