মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে অর্ডিন্যান্স জারী হয়েছিল সেই অর্ডিন্যান্সকে পার্লামেন্টে নিয়ে এসে পাশ করেছে বিএনপি৷ কারন সেই সময়ে অর্ডিন্যান্সে স্বাক্ষর করেছেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যার বৈধতা দিয়েছিলেন বিএনপির জিয়াউর রহমানই। এদিকে এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় এসেও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দিয়ে রাজনীতি করিয়েছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) সদর দফতর এবং আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে গত ২০ মার্চ এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ সব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, একটি খুনের বিচার না হলে যে আরেকটি খুন হয় সেই জন্য জিয়াউর রহমানকেও খুন হতে হল। জিয়াউর রহমানকে খুনের মামলায় বিএনপির কেউই তদন্তকারীদের সাহায্য করেনি। আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের হত্যা মামলা পুনরায় তদন্ত শুরু করলেও বিএনপি ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমানের হত্যা মামলা ধ্বংস করেছিল৷ বিএনপি খুনীদের দল। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আবার দশ লাখ লোক মেরে ফেলবে৷
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু থিসিস নির্ভর নেতা না হয়ে বাস্তববাদী নেতা ছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বঙ্গবন্ধু যা ভেবেছেন ১৯৭৪ সালে, ভারত তা বাস্তবায়ন করেছেন ১৯৮৬ সালে।বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের নিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদবোধ নিয়ে সবাইকে একই প্ল্যাটফর্মে এনেছিলেন৷ রাজনীতির প্ল্যাটফর্মে তিনি ধর্ম আনেননি৷ তিনি সবসময়ই বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতেন৷ তাঁর ১৮ মিনিটের বক্তব্যে একটি জাতির অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছিলেন। এই সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, আইইবির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো: শাহাদাৎ হোসেন শীবলু, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো: নুরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন।
ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন,বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর কাব্যের কবি এবং হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্তি দিতে তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। দিশাহীন বাঙালি জাতির দিশারি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরই পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন, মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণসহ নানান উন্নয়ন শেখ মুজিবুর রহনানই সূচনা করেছিলেন৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বাংলাদেশ এখন বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিনত হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই৷ আগামী নির্বাচনে উন্নয়ন ধারা অব্যহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
স্বাগত বক্তব্যে আইইবির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো: শাহাদাৎ হোসেন শীবলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছেন। সরকারের সকল উন্নয়নের কারিগরিক অংশীজন হল এই দেশের প্রকৌশলীরা। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো: নুরুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সাহস ও শক্তি যুগিয়েছিলেন৷
আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা সেন্টারের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভালবাসা পাননি, তিনি সারা বিশ্বের মানুষের ভালবাসা পেয়েছেন৷ তিনি ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও বাঙ্গালি ও বাংলাদেশের মানুষের কথা, বাঙালির ভাগ্য উন্নয়নের কথা বলে গিয়েছেন। আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদার বলেন, বাংলাদেশ না হলে আমরা সবাই কর্মী থাকতাম, অফিসার হতাম না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন না হলে আমরা আজীবন গোলামীই করতাম।
আইইবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক শেখ তাজুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইইবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রনক আহসান, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম হাজারী, ইঞ্জিনিয়ার প্রতীক কুমার ঘোষসহ আইইবির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। আলোচনা শেষে আইইবির মহিলা কমিটির সভাপতি ওয়াহিদা হুদা এবং সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা আহমেদ চাঁদনির উপস্থিতিতে মন্ত্রী দুস্থ এতিম মানুষদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন।