জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে গত ১৫ আগস্ট “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম” শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার ও দোয়া ও অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সকল সদস্যের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন স্কুল অব আর্টস এন্ড হিউম্যানিটিসের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্সের ডিন সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব আলম ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার ড. মো: মোয়াজ্জম হোসেন। এতে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন, প্রচেষ্টা ও বাস্তবতা : একটি মূল্যায়ন” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর জেনারেল এডুকেশনের সহযোগী অধ্যাপক ও কো’অর্ডিনেটর ড. মুহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম বঙ্গবন্ধু মানুষের হৃদয়ে, সীমাহীন স্বপ্নে থাকবেন উল্লেখ করে বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন বঙ্গবন্ধু কী জানতেন ওনাকে এভাবে হত্যা করা হবে? তাকে সংকেত দেয়া হয়েছিল। কানাডা, ভারত এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও বঙ্গবন্ধুকে সংকেত দিয়েছিল তাকে হত্যার বিষয়ে। বঙ্গবন্ধু তুড়ি মেরে সব উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কোনো দিনও, কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী এ রকম একটা অরক্ষিত বাসায় থাকেন? কতটুকু সাধারণ জীবন পরিচালনা করতেন তিনি এ থেকেই বোঝা যায়। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনাচারণ বুঝতে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, জাতীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর দেখিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনি মনে করেন আমি কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ি এগুলো দেখে কি করবো? বঙ্গবন্ধু না থাকলে যেখানে বাংলাদেশই হতো না, কিসের কম্পিউটার সায়েন্স? আপনি কম্পিউটার সায়েন্স পড়েছেন। কিন্তু কার কল্যাণে এটা সম্ভব হয়েছে? ভেবে দেখেন বঙ্গবন্ধুর কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এগুলো ক্লাসে শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে শিক্ষকদের।’ তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য কলঙ্ক উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা বঙ্গবন্ধুকে দেখবে জাতির পিতা হিসেবে। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটি জাতির জন্য কলঙ্ক। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিরা এখনও যারা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে অতি শিগগিরই তাদেরকে ধরে এনে বিচারের আওতায় আনার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করার আহবান জানান। বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে তিনি বলেন, কী অপরাধ ছিল ছোট্ট রাসেলের? ছোট্ট রাসেল বলেছিল আমি মায়ের কাছে যাব। ঘাতকেরা তাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পিছন থেকে গুলি করে নির্মম কায়দায় হত্যা করে। আসুন এ ঘটনায় ধিক্কার জানাই। এতে অন্যদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিন ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. নারগিস সুলতানা চৌধুরী ও আইন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম।
অন্যদের মাঝে স্কুল অব আর্টস এন্ড হিউম্যানিটিজের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ, ইংরেজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আহমাদ মাহবুব-উল-আলম, ইইই বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক এ. কে.এম. আকতারুজ্জামান, সিএসই বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক শারমিন জামান, কন্ট্রোলার অব এক্সামিনেশন এবং অ্যাডমিশন ও পাবলিক রিলেশন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এ. এইচ. এম. আবু সাঈদ, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রফিকুজ্জামান, ছাত্র বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক আবদুল মতিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।