‘মূল্যবৃদ্ধির পরও অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের মূল্য কম’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে মতবিনিময় করার সময় তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় দেশে মূল্যস্ফীতি ও বিদ্যুতের মূল্য ৫ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনের প্রেক্ষিতে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী।
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি যুক্তরাজ্যে অনেক আগেই ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতেও এই মূল্যবৃদ্ধি ২০ থেকে ১০০ শতাংশ। যেমন জার্মানিতে ২১ শতাংশ আবার বেলজিয়ামে ৯৫ শতাংশ। সেই তুলনায় আমাদের দেশে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি অনেক কম। সাম্প্রতিক সময়ে ৫ শতাংশ হারে দু’বার বাড়ানো হয়েছে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুতের ইউনিট মূল্য বাংলাদেশে ৭ টাকা ৩২ পয়সা, ভারতের দিল্লীতে ১১ টাকা ১৫ পয়সা, মহারাষ্ট্রে ১১ টাকা ৩৩ পয়সা, পাঞ্জাবে ৮ টাকা ৬৩ পয়সা। যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ টাকা ৩১ পয়সা, জার্মানিতে ৪১ টাকা ৯৩ পয়সা, বেলজিয়ামে ৪৬ টাকা ৪৬ পয়সা, জাপানে ২৫ টাকা ৭৪ পয়সা। জাপানসহ অন্য দেশের কথা বাদ দিলাম, ভারতের তুলনায়ও আমাদের বিদ্যুতের মূল্য কম।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি কোনো কোনো দেশে সেটি ২০-২২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যুক্তরাজ্যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি অনেক আগেই ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। রাশিয়াতে ১১.৮ শতাংশ, তুরস্কে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত গিয়েছিল বর্তমানে সেটি প্রায় ৬০ শতাংশ। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশ আর আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে সাড়ে ৮ শতাংশ। অর্থাৎ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এবং আশেপাশের দেশের তুলনায়ও আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি কম।’
‘অথচ বিরোধীদল বিএনপি পৃথিবীর মানচিত্রের এই তথ্যগুলো মানুষের সামনে আড়াল করে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায় এমন কি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সাথে দুর্নীতিকে যুক্ত করার চেষ্টা করে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার তারা বাংলাদেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, দুর্নীতির দায়ে বেগম খালেদা জিয়া শাস্তিপ্রাপ্ত বন্দি হয়েছিলেন এখন প্রধানমন্ত্রীর কৃপায় জেলখানার পরিবর্তে ঘরে অবস্থান করছেন। আর দুর্নীতির কারণেই বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের কারণে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাস্তিপ্রাপ্ত। বেগম জিয়ার আরেক পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা টাকা সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। এভাবে যাদের সারা গায়ে দুর্নীতির গন্ধ, তারা যখন দুর্নীতির কথা বলে তখন তাদের গায়ের দুর্নীতির দুর্গন্ধই শুধু ছড়ায় অন্য কোনো কিছু নয়।’