বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাবেক সচিব, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও অবৈতনিক উপাচার্য, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরী স্কুল ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, সমাজসেবক কাজী আজহার আলীর ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ১৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার)। ২০০৯ সালের এই দিনে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টায় বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া মরহুমের গ্রামের বাড়ী বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার সৈয়দ মহল্লা গ্রামে ড. সাকিনা আজহার টেকনিক্যাল কলেজের উদ্যোগে কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
কাজী আজহার আলী ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে (সিএসপি) যোগদান করে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর পূর্ব পাকিস্তানে মহকুমা প্রশাসক (এসডিও), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক পদে চাকরিকালে শোষিত ও অবহেলিত বাঙালি জাতির ন্যায্য দাবি ও অধিকার প্রদানে পাকিস্তান সরকারকে বিভিন্নভাবে বাধ্য করেছিলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তাঁর মানবতাবাদী কার্যক্রম বেড়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের শাসনামলে ৬টি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে থাকাকালে তিনি দেশে ও বিদেশে সরকারের নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেন। একাধিক সামরিক শাসনামলেও তিনি তাঁর মেধা, মনন ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে বারবার এ দেশকে রক্ষা করেছেন। বিদ্যুৎ বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে চাকরিকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ নির্মাণে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
সমাজসেবার পাশাপাশি লেখালেখিও করতেন তিনি। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ তিনকালসহ উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে Rural Development in Bangladesh, District Administration in Bangladesh, Decentralised Administration in Bangladesh, State Trading and Its Impact on Economy, স্মৃতির পাতা থেকে, ইতিহাসের অলিগলি, আমার দেখা একুশে, বাংলাদেশে জেলা প্রশাসন, কাজের ফাঁকে ফাঁকে, সেই সব দিনগুলি, ঝড়ো হাওয়ার মাঝে ইত্যাদি।