ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজনে গত ২৪-২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো তিন দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং। গত ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এবারের কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘গ্রিন এনার্জি ফর অল’।
এই কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো: হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ভিনসেন্ট চ্যাং। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চেয়ারপারসন এবং এই কনফারেন্সের জেনারেল চেয়ার প্রফেসর মো. মোসাদ্দেকুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কনফারেন্সের টেকনিক্যাল চেয়ার এবং ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রফেসর শহিদুল ইসলাম খান।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গবেষক, প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীদের জন্য একটি প্লাটফর্ম প্রদান করাই ছিল দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সের লক্ষ্য। তিন দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে দেশ ও দেশের বাইরের বিশিষ্ট অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞবৃন্দ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে প্যানেল আলোচনাসহ তাদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। এই কনফারেন্সের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের কাছ থেকে গবেষণাপত্রও আহ্বান করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো: হাবিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায়, গ্রিন এনার্জির ওপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর প্রবলভাবে জোর দিচ্ছি।’ বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির মাধ্যমে ৪০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি এই কনফারেন্সের কার্যবিবরণী বিদ্যুৎ বিভাগেও পাঠানোর পরামর্শ দেন, যাতে সরকার ভবিষ্যতের কর্মপন্থা প্রণয়নের সময় এগুলো বিবেচনায় নিতে পারে।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ভিনসেন্ট চ্যাং বলেন, ‘নীতিমালার গুরুত্ব তো রয়েছেই তবে প্রযুক্তিগত বিকাশকে অগ্রাহ্য করে এমন নীতিমালা খুব কমই সফল হয়েছে।’ এই কনফারেন্সের সাফল্য কামনা করে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি প্রযুক্তির উন্নয়নে ভূমিকা রাখে এমন কিছু কখনো কখনো অনেক নীতিমালা থেকেও ফলপ্রসু হতে পারে।’
কনফারেন্সের একটি কি-নোট সেশনে অংশ নিয়ে ‘কজ অ্যান্ড ইফেক্ট অফ কাবোর্নাইজেশন অন দ্য ক্লাইমেট: ডিকার্বোনাইজেশন অপরচুনিটিজ ইন দ্য ইলেকট্রিক পাওয়ার সেক্টর’ শীর্ষক বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর সাইফুর রহমান। পৃথক একটি কি-নোট সেশনে ‘ইনট্রিগ্রেটেড রিসোর্স প্লানিং অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট অপটিমাইজেশন ইন আর ই রিচ এনভায়রনমেন্ট’ বিষয়ে আলোচনা করেন ভারতের পাওয়ার রিসার্চ অ্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. নাগরাজা রামাপ্পা।
এই কনফারেন্সে প্যানেল সেশন পরিচালনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ ফৈয়াজ খান এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রফেসর এবং ইনস্টিটিউট অফ রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমোশনের ডিরেক্টর ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ (এসএমআইইইই, এফআইইবি)। কনফারেন্সের প্যানেলিস্ট হিসেবে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এর প্রফেসর তারেক আজিজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রফেসর এবং ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিরেক্টর আব্দুল হাসিব চৌধুরী এবং ডাক, টেলিযোগায়োগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার কাইনাত।
কনফারেন্সের শেষ দিনে সনদ ও পুরস্কার বিতরণসহ সেরা গবেষণা প্রবন্ধকে ড. ফাতেমা-রশিদ বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।