ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের শহর মালাংয় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছে অন্তত ১৭৯ জন। তবে ফুটবল মাঠে এমন মর্মান্তিক ঘটনা নতুন নয়। এমন অনেক ঘটনা তুলে ধরা হল।
পেরু, ২৪ মে, ১৯৬৪
পেরুর লিমার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের অলিম্পিক বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলছিল আর্জেন্টিনা। এ সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুদলের সমর্থকরা। সে সময় পদদলিত ও শ্বাসরোধে নিহন হন ৩২০ জন। এছাড়া এক হাজারজনের বেশি আহত হয়েছেন।
স্কটল্যান্ড, ২ জানুয়ারি, ১৯৭১
আইব্রক্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়বারের মতো সমর্থকদের মৃত্যর ঘটনা ঘটে। রেঞ্জার্স-সেল্টিক ডার্বি ম্যাচ চলাকালে মারা যান ৬৬ জন। এর আগে ১৯০২ সালে গ্যালারি ধরে ২৬ জন নিহত হয়।
মিশর, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪
স্থানীয় একটি ফুটবল ম্যাচে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ দর্শক ঢুকে পড়ে স্টেডিয়ামে। এতে পিষ্ট হয়ে ৪৮ জনের মৃত্য হয় আর আহত হন ৪৭ জন।
রাশিয়া, ২০ অক্টোবর, ১৯৮২
লুজনিকি স্টেডিয়ামে উয়েফা কাপের ম্যাচে স্পার্টাক মস্কোর মুখোমুখি হয় ডাচ দল হারলেম। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়ার সময় সিঁড়িতে পিষ্ট হয়ে মারা যান অনেকে। মৃত্য সংখ্যা নিয়ে এখনো রহস্য রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় এই ঘটনায় ৬৬ জন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৪৫ জন কিশোর। কিন্তু রাশিয়ার একটি গণমাধ্যম দৈনিক সোভিয়েতস্কি স্পোর্টের মতে সংখ্যাটা ছিল ৩৪০ জনের বেশি।
ইংল্যান্ড, ১১ মে, ১৯৮৫
ব্র্যাডফোর্ড এবং লিঙ্কন সিটির ম্যাচ চলাকালে কাঠের স্ট্যান্ডে আগুন লেগে ৫৬ জন নিহত হয়।
বেলজিয়াম, ২৯ মে, ১৯৮৫
ব্রাসেলসের হেইসেল স্টেডিয়ামে লিভারপুল সমর্থকদের ওপর হামলে পড়েন জুভেন্তাসের সমর্থকরা। এসময় অলরেড সমর্থকরা পালানোর চেষ্টা করলে ৩৯ জন নিহত হন।
ইংল্যান্ড, ১৫ এপ্রিল, ১৯৮৯
শেফিল্ডর হিলসবরো স্টেডিয়ামে এফএ কাপের সেমিফাইনালে নটিংহ্যাম ফরেস্টের বিপক্ষে খেলছিল লিভারপুল। তখন স্টেডিয়ামে একটি স্ট্যান্ডে সংঘর্ষে জড়িয়ে মারা যান লিভারপুল সমর্থকরা। পরিসংখ্যান বলছে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৯৬ জন। আর আহত হন ৭৬৬ জন। এ ঘটনায় চার বছর কোমায় থেকে মারা যান আরেকজন সমর্থক। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৭ জন।
ফ্রান্স, ৫ মে, ১৯৯২
কর্সিকার ফুরিয়ানি স্টেডিয়ামে ছাদ ধসে ১৮ জন নিহত ও ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়।
গুয়াতেমালা, ১৬ অক্টোবর, ১৯৯৬
১৯৯৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে গুয়াতেমালার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল কোস্টারিকা। তার আগেই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। গুয়েতেমালা সিটির ম্যাথিও ফ্লোরেস ন্যাশনাল ফুটবল স্টেডিয়ামের একটি গ্যালারিতে দর্শকদের ভিড়ে পদদলিত হয়ে ৯০ জনের মৃত্যু হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকা, ১১ এপ্রিল, ২০০১
জোহানেসবার্গের এলিস পার্ক স্টেডিয়ামে অরল্যান্ডো পাইরেটস ওকাইজার চিফদের ম্যাচ চলাকালীন পদদলিত হয়ে ৪৩ জন মারা যান। এর আগে ১৯৯১ সালের ১৩ জানুয়ারি, এই দুদলের সমর্থকদের সংঘর্ষে ৪০ হন মারা গিয়েছিল।
ঘানা, ৯ মে, ২০০১
দেশটির ঘরোয়া লিগে হার্টস অফ ওকস এবং কুমাসির ম্যাচের ফলাফলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ১২৬ যান নিহত হন। দলের পরাজয়ের পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কুমাসির সমর্থকরা। প্রতিপক্ষের সমর্থকদের ওপর প্রজেক্টাইল নিক্ষেপ ও চেয়ার ভাঙচুর করে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে, এতে পদদলিত হয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মিশর, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১২
মিশরের পোর্ট সাইড স্টেডিয়ামে আল-মাসরি ও আল-আহলির ম্যাচ চলাকালে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন দুই দলের সমর্থকরা। এতে মারা যান ৭৪ জন।
ক্যামেরুন, ২৪ জানুয়ারি, ২০২২
ইয়াউন্দেতে আফ্রিকা নেশন্স কাপের ম্যাচে কমোরোসের মুখোমুখি হন স্বাগতিক ক্যামেরুন। নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পিষ্ট ও পদদলিত হয়ে মারা যায় আটজন এবং আহত হয় অনেকে।