ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কর্ডএইড বাংলাদেশ-এর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্ডএইড বাংলাদেশ-এর রিসাইক্লিং ফর দি এনভায়রনমেন্ট বাই স্ট্রেংদেনিং ইনকাম অ্যান্ড লাইভলিহুড অফ অনট্রপ্রনারস – রেজিলিয়েন্ট (Recycling for the Environment by Strengthening Income & Livelihood of Entrepreneurs- RESILIENT) নামক নতুন প্রকল্পে তহবিল প্রদান করেছে এই প্রতিষ্ঠান। রিসাইক্লিংয়ের জন্য নিরাপদ ও দক্ষতার সাথে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিয়ে কাজ করাই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য। এই প্রকল্প ইকোসিস্টেম থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে টেকসই জীবিকা নির্বাহের জন্য উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সমিতির জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুর রউফ নান্নু বলেন, “বর্জ্য সমস্যা আমাদের শহরের জন্য অন্যতম একটি বড় সমস্যা। পরিবেশগত সমস্যার পাশাপাশি বর্জ্য দূষণের কারণে নাগরিকদের নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায়ও ভুগতে হচ্ছে। এই সমস্যার মোকাবেলায় সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেরই অংশগ্রহণ জরুরি।” ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ঢালী বলেন, “সরকারের একার পক্ষে সম্পূর্ণভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহজসাধ্য বিষয় নয়। তাই, এর সাথে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং কমিউনিটি অর্গানাইজেশন এর সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় কর্ডএইড বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা পরিবেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করছি।” প্রকল্পের ১২ মাস সময়কালে রেজিলিয়েন্ট ৪২০জন সুবিধাভোগীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪০০জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং ২০জন বর্জ্য সংগ্রহকারী। প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো উভয় সিটি কর্পোরেশনে ৬টি কারখানার মাধ্যমে প্রতি মাসে ৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেল করা। কর্ডএইড-এর প্রতিনিধি বলেন, “প্যাকেজড পণ্যের চাহিদা যতদিন থাকবে, বর্জ্য সমস্যাও ততদিন থাকবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও এই সমস্যা হ্রাস করার বিকল্প উপায় খুঁজে বের করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। রিসাইক্লিং বা সার্কুলার ইকোনমি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্লাস্টিক রিসাইক্লিংকে একটি লাভজনক ও মহৎ ব্যবসা হিসেবে তুলে ধরলে তা নতুন বিভিন্ন উদ্যোগ আকৃষ্ট করতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আমরা পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে পারবো। পাশাপাশি, রিসাইক্লিংকে অন্যতম বিকাশমান শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।” দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া ম্যাডসবার্গ বলেন, “বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনানুষ্ঠানিক খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মূল্যবান সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসায়িক মডেল, জ্ঞান ও সক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে প্রকল্পটি এই খাতের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।”
সম্প্রতি, এসআর এশিয়া-র “ইনটিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অফ প্লাস্টিক অ্যাসর্টমেন্ট অ্য্যন্ড কনট্রিবিউশন টুওয়ার্ডস গ্রিন ইকোনমি (ইমপ্যাক্ট-জিই)” নামক প্রকল্পে তহবিল প্রদান করেছে ফাউন্ডেশনটি। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো একটি কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গড়ে তোলা এবং স্থানীয় বায়ু, পানি ও ভূমি দূষণ কমিয়ে আনা।