বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি। নিজে কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন না, অথচ বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গান গেয়ে মাতিয়েছেন পুরো বিশ্ব। শুধু গান কেন; ছোট গল্প, উপন্যাস, কাব্য, নাটক-সব ধরণের রচনাতেই তিনি পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। এমনকি জীবনের শেষ বয়সে তিনি এসে আঁকা শুরু করলেন ছবি, তাও পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত হলো। গীতাঞ্জলী কাব্যের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। আবার ছোট-গল্পেও তার জুড়ি মেলা ভার।
আজ রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গ্রীন রোডের পান্থপথে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস মিলনায়তনে এসইউ-এর বাংলা বিভাগ আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণে আলোচনা সভায় দুই পর্বের অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের অতিথি বক্তা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ এসইউ-এর বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথ নয় তিনি তার অন্য ধরনের কর্মজীবন নিয়ে বলেন। তিনি কৃষকদের জন্য রবীন্দ্রনাথের নৈশ স্কুল চালু করা, ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও কৃষকদের সম্মিলিত জলসেচ করার কথা উপস্থিত সবাইকে জানান। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অকল্পনীয় ও অভাবনীয় ঘটনার কথাও সবাইকে বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল বাশার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী তুলে ধরে বলেন, তিনি তার বাবার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। তার কাব্য সাহিত্যের প্রধান বক্তব্য ছিল ভাব গম্ভীরতা। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের জীবনী জানার চেয়েও বড় কথা হলো তা থেকে আমরা কী শিখলাম এবং তা আমাদের জীবনে কীভাবে কাজে লাগালাম।
সভাপতির বক্তব্যে এসইউ’র উপ-উপাচার্য প্রফেসর শামীম আরা হাসান উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রবীন্দ্রনাথ এমন একটি মহাসমুদ্র যার কণা মাত্র আমি বা আমরা ছুতে পারবো না। সাহিত্য অন্তর দিয়ে ধারন করতে হয়। প্রতিটি দেশ তাদের মাতৃভাষায় সাহিত্যকে লালন করে। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যের ভাণ্ডার। তার সাহিত্য চর্চার বিষয়। তিনি আরও বলেন, এমন কোনো ভাব নেই যা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেননি। তিনি সব ভাব নিয়েই লিখেছেন। সেই সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার উদ্ধৃতি তুলে ধরে তিনি রবীন্দ্রনাথের কর্মজীবনকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথকে যদি ধারন করা যায়, তার সাহিত্যকে যদি ধারন করা যায় তাহলে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মো: আল-আমিন মোল্লা বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মজীবন সম্পর্কে এই অল্প সময়ে বলা অত্যন্ত কঠিন। এই ধরনের আয়োজনের জন্য তিনি এসইউ-এর বাংলা বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তার বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম, কর্মজীবন, বিয়ে সম্পর্কে উপস্থিত সবার মাঝে তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের নীতি ও আদর্শের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম এ মাবুদ বলেন, এসইউ-এর বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বড়মাপের কবি ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ। সাহিত্যের এমন কোনো বিষয় নাই যা তিনি লিখেননি। রবীন্দ্রনাথ উচ্চমানের চিত্রশিল্পী ছিলেন। তার জীবন অনেক বর্ণাঢ্য।
পরে অনুষ্ঠানের অতিথি বক্তা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান উপাচার্য।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির রেজিস্টার এস. এম. নূরুল হুদা, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।