খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন । বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে এমবিএ করছেন।
জান্নাতুল ফেরদৌসের শৈশব কেটেছে ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও টিকাটুলীতে। জান্নাতুল এ কে হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে এইচএসসিতে হলিক্রস কলেজে ভর্তি হন। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ চলার কারণে জান্নাতুলের যাতায়াত কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। তাই জান্নাতুল কলেজ পরিবর্তন করে বাসার কাছে দনিয়া কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে পাস করেন।
গ্র্যাজুয়েশনের পর জান্নাতুল করপোরেট হাউসে চাকরি করেন প্রায় এক বছর। এর পর জান্নাতুল সরকারি চাকরির মাধ্যমে এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার ও তাদের জন্য কিছু করার কথা ভাবেন। এ ভাবনাগুলো থেকেই জান্নাতুল বিসিএস পরীক্ষা দেন।
জান্নাতুলের মতে, বিসিএসে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় যেহেতু ১০ থেকে ১৫টি বিষয় থাকে, তাই রুটিন করে পড়াশোনা করা উচিত। তবে জান্নাতুলের ধরাবাঁধা কোনো রুটিন ছিল না। বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর থেকে ৪০তম বিসিএসের ফলাফল পর্যন্ত সময় লেগে যায় চার বছর। ওই সময় বৈশ্বিক অতিমারি করোনাসহ পারিবারিক কারণে তিনি ছয় মাস যুক্তরাজ্যে ছিলেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে এমবিএ কোর্সে ভর্তি হন। ওই সময় এমবিএর পড়াশোনা এবং সংসার করে তিনি পড়ালেখা করেছেন। তবে জান্নাতুল যতটুকু পড়েছেন, সেটা বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস অনুযায়ী পড়েছেন। লিখিত পরীক্ষার সময় মাথা ঠান্ডা রেখে উত্তর করার চেষ্টা করেছেন। যেহেতু গুছিয়ে লেখার অভ্যাস ছিল জান্নাতুলের; তাই তুলনামূলক কম পরিশ্রমে জান্নাতুল লিখিত পরীক্ষায় পাস করে যান। মৌখিক পরীক্ষার আগে পিএসসি প্রদত্ত সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। জান্নাতুলের মতে, আমি মনে করেছিলাম, সবকিছু ঠিক থাকলে আর ভাগ্য সহায় হলে আমার পছন্দের প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ পেতে পারি। ফল প্রকাশের পর জান্নাতুল জানতে পারেন প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন।
বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে জান্নাতুল জানান, সিলেবাস অনুযায়ী রুটিন করে সব বিষয় পড়াশোনা করতে হবে। নতুন পরীক্ষার্থীদের যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে। তা হলো- সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা; বিগত বছরের প্রশ্ন পর্যালোচনা; পরীক্ষা কেন্দ্রে মাথা ঠান্ডা রেখে উত্তর লেখা। এ ছাড়া বিষয়গুলোতে দুর্বলতা আছে, সেগুলো অনুশীলন করা; যাতে দুর্বল বিষয়গুলোর পরীক্ষার উত্তরও মোটামুটি ভালো হয়। কখনোই কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়ে আর অন্য বিষয়গুলো কম পড়ে পরীক্ষায় খারাপ করা করা যাবে না। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ধারনা করে উত্তর করা ঠিক নয়। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষায় কোনো প্রশ্ন বাদ দেওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করা উচিত ।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষার আগে বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন ও সিলেবাস পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, সংবিধান, ভৌগোলিক অবস্থান, সমসাময়িক বিষয়াদি, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, সাধারণ গণিত, বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ এবং বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ের প্রশ্নগুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।