দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ১ম সমাবর্তন বুধবার (১৩ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনে ইউনিভার্সিটির শুরু থেকে ফল-২০২০ পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম সম্পন্নকারী রেজিস্ট্রেশনকৃত সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে ৩ জনকে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল ও ৬৩ জন শিক্ষার্থীকে ভাইস-চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেলসহ মোট ৬৬ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো: আবুল বাশার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি প্রাঞ্জলপূর্ণ ও আনন্দপূর্ণ উল্লেখ করে সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বক্তৃতায় শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ স্বপ্নের এই আনন্দঘন মুহূর্তে ১ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে যোগ্য ও কার্যকরী মানবসম্পদ গড়ে তুলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যগন সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি একেবারেই নামমাত্র টিউশন ফিতে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম টিউশন ফিতে অথবা বিনা বেতনে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আগামী বছরে নিজস্ব ক্যাম্পাসে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার পর মোট শিক্ষার্থীর ৫০% শিক্ষার্থী বিনা বেতনে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা যে আদর্শের শিক্ষা পেয়েছে, শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত করতে পারবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, প্রিয় গ্র্যাজুয়েট বৃন্দ আজকে দিনটি তোমাদের জীবনে আনন্দের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এ রকম আনন্দময় ঘটনার জন্য। শিক্ষার্থীরা তোমরা চার বছর পরিশ্রম করে জ্ঞান অর্জন করেছ যা তোমাদের বড় সম্পদ। তিনি তার বক্তৃতার তিন মা অর্থাৎ জন্মদাত্রী মা, মাতৃভাষা, মাতৃভূমির কথাও বলেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের এই তিন মায়ের প্রতি দায়িত্ববোধের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি তথ্যের এই অবাধ প্রবাহের যুগে হার্ভার্ড সাইমনের বক্তব্যের উদ্ধিৃতি দিয়ে বলেন, তথ্যের আধিক্য মনোজগতের দারিদ্র স্মৃষ্টি করে। তিনি শিক্ষার্থীদের চমৎকার মানুষ হয়ে তারা নিজেরা কতটুকু আলোকিত করতে পারছে সেটা দেখার কথাও বলেছেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি, এমপি বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। আজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। তিনি নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফি অনেক কম রাখছে শুনে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, দারিদ্রতা কখনই মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে নতুন প্রজন্মকে নতুন সম্ভবনা অনুযায়ী তৈরি করার কথা বলে বিশাল সম্ভাবনার কথাও বলেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। এই বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভবিষ্যতে শিক্ষায় ৬% বিনিয়োগ করতে পারবো ইনশাল্লাহ। তিনি কারিগরি শিক্ষার প্রতি নজর দিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনার কথাও বলেন।
সমাবর্তনে আরো উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবু, এমপি, রাশেদ খান মেনন, এমপি, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রকৌশলী মো: আব্দুল আলিম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মকর্তারা। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্নিমা।