দেশবাসীকে লকডাউন বিধিনিষেধ মেনে চলার বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একইসাথে দলের নেতা-কর্মীদের খেটেখাওয়া মানুষের পাশে থাকার আহবান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সীমিত পরিসরে সাংবাদিকবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ অনুরোধ ও আহবান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের স্বাস্থ্যসুরক্ষার স্বার্থে, এই করোনার হাত থেকে রক্ষা করতে সরকার লডকডাউন ঘোষণা করেছে। তাই দেশবাসীকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাই, নিজের, পরিবারের এবং দেশের স্বার্থে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা পালন করার জন্য।
‘করোনার নূতন ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি শক্তিশালী, সংক্রামক এবং লকডাউন বিধিনিষেধের ব্যত্যয় হলে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে’ স্মরণ করিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘সরকার এই লকডাউন কখনো প্রলম্বিত করতে চায়না। কিন্তু জনগণের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্যই এ ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন লকডাউন সমাধান বলেও আমরা মনে করি না। সবাই যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলেন, তাহলে আমাদের পক্ষে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দলের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির ৫ জন নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেক নেতা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের ১২৫ জনেরও বেশি সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অনেকে এবং দলের সাত থেকে আটশ’ নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এসময় লকডাউন চলাকালে খেটেখাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সবসময় জনগণের পাশে ছিল, আছে। অতীতের মতো এখনও খেটেখাওয়া মানুষেরর পাশে থাকার জন্য তাদের আহবান জানাই।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি দু’জন নির্বাহী সদস্যের পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল সাহেব কয়েকদিন আগে ‘পলায়ন’ সম্পর্কে একটি কথা বলেছিলেন। এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সবাই আস্তে আস্তে পালাচ্ছে। বিএনপি যে পলায়নপর তার প্রমাণ হচ্ছে এই দু’জনের পদত্যাগ।
একচ্ছত্র শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য সরকার গণতান্ত্রিক সিস্টেম বদলে ফেলছে’-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মঙ্গলবার সংসদে বিএনপিসহ বিরোধী দলের এমপিরা প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার উপস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ে যেভাবে সমালোচনা করেছেন এবং একইসাথে মির্জা ফখরুল সাহেবরা প্রতিদিন যে সরকারের প্রতি বিষেদগার ও অমুলক সমালোচনা করছেন, তাতেই প্রমাণ হয়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং মুক্তভাবে বিতর্ক ও সমালোচনার অধিকার সকলের আছে।
বিএনপি বরং দেশে গণতন্ত্র হরণের অপচেষ্টা করেছে, সেকারণে তারা ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিলো’ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘এই নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে এব সংসদীয় গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে।
ডা: জাফরুল্লাহ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাফরুল্লাহ সাহেব বিএনপির সামান্য সমোলোচনা করায় জাতীয় প্রেসক্লাবে তার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেভাবে তেড়ে গেলো, এতেই প্রমাণ হয়, বিএনপির নিজেদের মধ্যেই গণতান্ত্রিক চর্চা নেই।’