ডাক ও টেলিযেগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির সামনে যাওয়ার সোপান রচনা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, বাংলা এবং বাঙালি এক অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে, পথ দেখাবে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি  তৈরি করেছিলেন। মন্ত্রী গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকায় জিপিও মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব  আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রাম এগিয়ে নিতে মন্ত্রী সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান জানানোর জন্য তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেয়ে ভাল কাজ আর কিছু হতে পারে না। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু বাঙালি ও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে কালজয়ী নাম উল্লেখ করে বলেন, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা, ভূমি ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে তার গৃহীত কর্মসূচিগুলো ছিলো আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি। ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি হিসেবে টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ, ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ, কুদরাত এ  খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন জ্ঞান ভিত্তিক জাতি বিনির্মাণের সোপান। দীর্ঘকাল আগে কী করে বঙ্গবন্ধু আজ ও আগামী দিনের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবলেন এবং এই সব প্রতিষ্ঠানকে সবল ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন তা অভাবনীয় বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮-এর আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬ দফা, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে ষাটের দশকের রাজপথে ছাত্র লীগের লড়াকু সৈনিক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির বড় সম্পদ। তিনি বলেন,  পাকিস্তানের জন্মের পর থেকে সত্তরের নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রামের পথবেয়ে একাত্তরের জনযুদ্ধ ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারী বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান তিনি। মন্ত্রী উপস্থিত অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পাঠ্য বইয়ের শিক্ষার পাশাপাশি  সন্তানদের মানুষ এবং বাঙালি বানাতে ভুলবেন না। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রীয় এই চার মূলনীতির ভিত্তিতে দেশ গড়ার মন্ত্রে উজ্জ্বিবীত হয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোযোগ সচিব বলেন বঙ্গবন্ধু ছিলেন জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের মহানায়ক। এ ভূখণ্ডে রাষ্ট্র গঠনের সকল উপাদান ছিল কিন্তু এ ভূখণ্ডের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর আগে  রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেবার মতো কোন বাঙালি ছিল না। বঙ্গবন্ধু তার বিস্ময়কর নেতৃত্বে সাত কোটি বাঙালিকে এক সুতায় বেঁধেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা, আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুব খানের সামরিক শাসনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সবিস্তারে বর্ণনা করেন।

ড. শাহজাহান মাহমুদ স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, সাত মার্চের ভাষণ এবং মার্চে স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

পরে মন্ত্রী  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত   রচনা প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে