শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন ‘নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে মূল সেনানী হচ্ছেন শিক্ষকেরা। আমরা পথচলার শুরুর দিকেই আছি। আমরা সবাই মিলে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারবো। সরকার নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে প্রায় চার লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিতি গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সেগুন বাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ বিস্তরণে অনলাইন শিক্ষক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বক্কর ছিদ্দীক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব কামাল হোসেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল সেনানী হচ্ছেন শিক্ষকগণ। আমাদের শিক্ষকগণ এতোদিন যে আঙ্গিকে শিখন শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে তাদের শিখন শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষায় এই যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এতে আমাদের শিক্ষকদের প্রস্তুত করার জন্য প্রশিক্ষণের কোনও বিকল্প নেই। এ জন্য আমরা মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রত্যেক শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি। সারা বাংলাদেশের সকল শিক্ষককে একই সময়ে একই ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষকরা যাতে প্রশিক্ষণ হাতে-কলমে গ্রহণ করার আগে নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে পারে। প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষায় যে পরিবর্তন হচ্ছে তা বিশদভাবে জানার ফলে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাক্রমে যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তাতে আমাদের প্রস্তুতিটাও ব্যাপক। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় যে বাধা আসবে, তা হলো- আমাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস। শিক্ষার্থী কত নম্বর পেলো, বছর শেষে শ্রেণিতে কোন জায়গায় শিক্ষার্থীর অবস্থান সেটা নিয়ে আমরা যে পরিমান উদ্বিগ্ন এবং তার উপর আমরা যতো বেশি জোর দেই, তার থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থী কতটা শিখছে, কতটা ভালোমানুষ হচ্ছে, কতটা তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হচ্ছে, কতটা মানবিক মানুষ হচ্ছে, তার সৃজনশীলতা কতটুকু বিকাশ হচ্ছে সেটা দেখবার মতো দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে কিনা সেটা খুব জরুরি। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে যদি সেই জায়গাটিতে আমরা পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে আমাদের আকাঙ্খা সফল হবে না। সে জন্য আমরা আসলে কী চাইবো সেই জায়গায়টিতে কাজ করবার প্রয়োজন রয়েছে। সে জন্য আমাদের প্রয়োজন মনোভাব পরিবর্তনের কাজটি জোর দিয়ে করা।

দীপু মনি বলেন, ‘জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির যে বই হাতে পাবেন সেটিই একেবারে চূড়ান্তরূপ সেটি ভাববেন না। এটিই চূড়ান্ত রূপ নয়। এর উপর আরও কাজ করার আছে। শিক্ষক প্রশিক্ষণেও আরও পরিবর্তন নিয়ে আসবো। এটি অনেক বড় কাজ। শিক্ষায় আমরা পরিবর্তনের কথা বলছি না। আমরা সংস্কারের কথা বলছি না। আমরা শিক্ষায় রুপান্তরের কথা বলছি। আমরা দুই/তিন বছরের চেষ্টায় একেবারে নিখুত একটা পরিকল্পনা করে ফেলবো সেটা বলার দৃষ্টতা আমার নেই। তবে আমরা সবাই মিলে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারবো এটি আমার বিশ্বাস।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে