‘বিএনপি নির্বাচন এলে ধর্মকে ব্যবহার করে কিন্তু ধর্মের জন্য কোনো কাজ করে না’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ২০২১ ও করোনা সচেতনতা আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক সভায় সভাপতিত্ব করেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামাত নির্বাচন এলে ধর্মকে ব্যবহার করে, কিন্তু ধর্মের জন্য কোনো কাজ তারা করেনি। বরং তারা ধর্মীয় হানাহানি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ধর্মকে ব্যবহার করে না। আমরা ইসলামের জন্য, আলেম- ওলামাদের খেদমতের জন্য কাজ করি এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার যাতে সুনিশ্চিত হয়, তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা যাতে এদেশে কেউ খর্ব করতে না পারে সেজন্য কাজ করি এবং তাদের ধর্মের কল্যাণের জন্যও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কাজ করা হয়। কারণ, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন বাংলাদেশ।’

ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা ধর্মপ্রাণ জননেত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের জন্য যতো কাজ করেছেন, এদেশে আর কারো আমলে তা হয়নি। দেশের আলেম সমাজের শতবর্ষের পুরনো দাবি ছিলো একটি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তান আমলেও তা পুরণ হয় নাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি বাস্তবতা।’

‘জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, এরশাদ সাহেব কেউই কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দেননি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমী মাদ্রাসার শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, সকল অপপ্রচার ঘুচিয়ে তাদেরকে চাকুরিও দিয়েছেন’ উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মসজিদ স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন, বহু জেলা এবং উপজেলায় মসজিদ ইতিমধ্যে নির্মিত হয়েছে, উদ্বোধনও হয়েছে। আমরা ১৩ বছর আগে সরকার গঠনের পূর্বে বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েকটি মসজিদভিত্তিক মক্তব ছিলো আর আলেমরা ভাতা পেতো পাঁচশ’ টাকা। শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর প্রায় দুই লাখ মসজিদভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রতি মক্তবে একজন আলেম ৫ হাজার ২শ’ টাকা করে ভাতা পান। এটি কেউ কখনো ভাবে নাই।’

‘বিএনপি-জামাত ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত একযোগে ক্ষমতায় ছিলো, তারা এই কাজগুলো করে নাই’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছে, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে ধর্মবিরোধী শ্লোগান দিয়ে, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে ভোটগুলো নিজের বাক্সে নেয়ার জন্য চেষ্টা করেছে। যার নিজের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’

সভাপতির বক্তৃতায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পবিত্র ইসলামের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিলেন, ইসলামী ফাউন্ডেশন তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে মদ, জুয়া, হাউজি এগুলো তিনি বন্ধ করেছিলেন, যেগুলো বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর জিয়াউর রহমান চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সকল ধর্মের কল্যাণে কাজ করছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মো: আনোয়ার হোসেন, ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমদুল্লাহ ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। অতিথিবৃন্দ দেশব্যাপী ক্বিরাত প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের সুর’ এ নারায়ণগঞ্জ জেলার সেরা প্রতিযোগীদের ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সমাজসেবী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির পক্ষ থেকে পুরস্কার তুলে দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে