বৃক্ষরোপণ অভিযানকে একটি টেকসই ও স্বত:স্ফূর্ত কার্যক্রমে পরিণত করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত ও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৯’ প্রদানের জন্য ১৪ জন ব্যক্তি ও ১৬ টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার।

আজ রবিবার ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৯’ মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত পদক সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম, মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা এর উপাচার্যগণ এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, মুকিত মজুমদার বাবু-সহ কমিটির অন্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা, জেলা, বিভাগ পর্যায়ে বিচারের পর জাতীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে থাকে।

জাতীয় কমিটির সদস্যগণ বিস্তারিত আলোচনাক্রমে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়,উচ্চ বিদ্যালয়,এবতাদায়ী মাদ্রাসা, সিনিয়র মাদ্রাসা’ শ্রেণি তে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে ধানদিয়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন,সাতক্ষীরা; কাজী মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদী এবং শিয়ালী তালেমুন কুরআন নূরনী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা, পটুয়াখালী মনোনীত করেন। ‘কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় যথাক্রমে মৌকরণ বি, এল, পি ডিগ্রি কলেজ, মৌকরণ, পটুয়াখালী; আছমতআলী খান কলেজ, লাউকাঠী, পটুয়াখালী এবং আলহাজ মোল্লা জালাল উদ্দিন কলেজ, খুলনা । ‘ইউনিয়ন পরিষদ,উপজেলা পরিষদ,জেলা পরিষদ,পৌরসভা,সিটি কর্পোরেশন’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে উপজেলা পরিষদ, রামপাল, বাগেরহাট এবং ঈশ্বরদী পৌরসভা, পাবনা মনোনীত হয়। ‘অধিদপ্তর,পরিদপ্তর,সেক্টর কর্পোরেশন,প্রতিষ্ঠান’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে আর.আর.এফ, খুলনা এবং পটুয়াখালী পওর বিভাগ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, পটুয়াখালী এবং কেরানীগঞ্জ কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্ৰ ইটাভাড়া, ঢাকা মনোনীত হয়। এনজিও,ক্লাব,স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে বনায়ন , জগতি, কুষ্টিয়া এবং বাংলাদেশ স্কাউটস, পঞ্চগড় মনোনীত হয়েছেন।

‘বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত বাগান’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে সামাজিক বন বিভাগ, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর; সামাজিক বন বিভাগ যশোর (এসএফএনটিসি) সাতক্ষীরা এবং কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ, কচ্ছপিয়া বিট, বাঘখালী রেঞ্জ মনোনীত করা হয়। ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে উনুচিং মারমা, খাগড়াছড়ি; পারভীন সিরাজ, মুন্সিগঞ্জ এবং তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে ইসাক আহমেদ, নাটোর এবং মো: মেহেদী হাসান কবির, বড়লেখা, মৌলভীবাজার মনোনীত হয়েছেন। ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন নার্সারী’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে উত্তরা ভাই ভাই নার্সারী , প্রোঃ হেলেনা আক্তার হেনা, সাভার, ঢাকা; ফতেয়াবাদ নার্সারী, প্রোঃ মোছাম্মঃ রুজিনা ইয়াছমিন, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে বৃক্ষবন্ধু নার্সারী, প্রোঃ নিলু বেগম, মৌলভীবাজার এবং সততা নার্সারী, অঞ্জনা রানী পাল, খুলনা মনোনীত হয়েছেন। ‘বাড়ীর ছাদে বাগান সৃজন’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে নাহিদা বারিক, কলাবাগান, ঢাকা; রাখী দে, দিনাজপুর সদর এবং ওয়াহিদা ইয়াসমিন, বেতিয়াপাড়া, রাজশাহী মনোনীত হয়েছেন।

‘বৃক্ষ গবেষণা,সংরক্ষণ,উদ্ভাবন’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য ড. মোঃ আব্দুল হাকিম মন্ডল, রাজবাড়ী; মোঃ মোকাম্মেল হক খান, চট্টগ্রাম এবং হৃদয় চন্দ্ৰ দেবনাথ, মৌলভীবাজার মনোনীত হয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে বনমন্ত্রী বলেন, দেশে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বৃক্ষরোপণ করে প্রশংসনীয় কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন সরকার গত অর্থবছর দেশে আট কোটির অধিক বৃক্ষ রোপণ করেছে, এবারেও আট কোটির ওপরে বৃক্ষরোপণ করা হবে। সরকারের পাশাপশি ব্যক্তি ও বেসরকারী সংস্থাসমূহ এগিয়ে আসলে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের এবারের প্রতিপাদ্য,’মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ বাস্তবে রূপ দিতে পারবো। মন্ত্রী বলেন, পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের সম্মানীর পরিমান ভবিষতে বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, বৃক্ষরোপণে যাঁরা বিশেষ অবদান রাখেন তাঁদেরকে ১৯৯৩ সন হতে “বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার” প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রতিটি পুরস্কার প্রাপককে সনদপত্র ছাড়াও ১ম স্থান অধিকারীকে ত্রিশ হাজার টাকা, ২য় স্থান স্থান অধিকারীকে বিশ হাজার টাকা এবং ৩য় স্থান অধিকারীকে পনের হাজার টাকার একাউন্ট পেয়ী চেকে অর্থ প্রদান করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে